এখানে ব্যাক্তিগত বলে কিছু নেই। অভিজিৎ মিত্রের কবিতার লাইন প্রত্যেক মানুষের সঙ্গে কোথাও না কোথাও জড়িয়ে। জীবনকে নেড়ে চেড়ে, খুব কাছ থেকে অনুভব করার মতো- মৃত্যুর ব্যাখ্যাও করেছেন নতুন ভাবে। স্বেচ্ছায় বলতে পারেন ' না হয় কিছুটা সময় সঙ্গে হাঁটলাম, বড়ো জোর শ্মশান পর্যন্ত। না, জীবনের প্রতি তাঁর কোনও অভিযোগ নেই। প্রকাশ্যে তাই বলেন- 'একোরিয়ামের কাচে জানালা এঁকে দিলাম, তুমি নিজের মতো স্বপ্ন খুঁজে নিও।'
কখনও বাস রাস্তা, নদী, ঘাট, সরকারি হাসপাতাল। নিজেকেও যেন মুখোমুখি দেখতে পাই কবিতায়। কবির পাশে পাশে হাঁটতে থাকি গঙ্গার ঘাট থেকে কলকাতার অন্দরমহল। নিজেকে পুড়িয়ে কবি দেখতে চান- কতটা প্রেম মোবাইলে ভেসে এলো। হারিয়ে যাওয়া কিছু ফিরে পেতে কবির প্রবল আকুতি। অনেক বিশ্বাসে নোঙর ফেলে রাখেন প্রতি পূর্ণিমা রাতে। হারানো নদীর বাঁকে যদি খুঁজে পাওয়া যায় সেই প্রিয় মুখ।
আমরা কেবলই দ্বন্দ্ব কলহে মেতে থাকি। সামান্য না পাওয়াও কতই না কষ্ট দিয়ে যায়। অথচ কবি সরল ভাবে বুঝিয়ে দেন 'জন্ম থেকে আতিশয্য, সমারোহ কেবল মৃত্যুর দিকেই হেঁটে চলা।'
কবিতায় কোথাও বিন্দুমাত্র বরফ শীতলতা কিংবা শব্দের অহেতুক প্রয়োগ নেই। সহজ, সাবলীল ভাষায় আধুনিক কবি বজ্রআঁটুনি দিয়ে বেঁধেছেন কবিতাকে। পাতার পর পাতা ওল্টাতে ওল্টাতে বিস্মিত হতে হয়েছে। ছোটো ছোটো কবিতাগুলো মনে করিয়ে দিয়েছে জাপানের 'হাইকু' কবিতার কথা। ছোট্ট কিন্তু অসম্ভব শক্তিশালী। কোনও কিছুই প্রাক্তন হয়ে যায় না। পাস-ওয়ার্ড কিংবা প্রেমিকা। ফিরে যাবার আগেও একদিন চলে যেতে হয়। পুরোনো রেনকোট পরে যে বালক গ্যাসবেলুনকে খোঁজে তাঁর মুখে পাপড়ি চাট গুঁজে দিয়ে কবি উধাও হতে চান মাঝে মাঝেই।
Your Name:
Your Review:
Note: HTML is not translated!
Rating: Bad Good
Copyright © 2014 Dokandar Developed By Dipayan Biswas